নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার আধাইপুর ইউনিয়নের সত্যপাড়ায় সরকারি জায়গায় ‘মুজিব শতবর্ষ’ উপলক্ষে গুচ্ছগ্রাম গড়ে তোলা হয়েছে। গুচ্ছগ্রামে যাওয়ার সরকারি কোন রাস্তা নাই বলে জানিয়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। গুচ্ছগ্রামের চারপাশে ব্যক্তিমালিকানা জমি থাকায় মানুষ চলাচলের জায়গা রেখে বাঁশ দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। এতে গত ১৫দিন থেকে দূর্ভোগে পড়েছে গুচ্ছগ্রামবাসী। গুচ্ছগ্রামে প্রবেশে সরকারি ভাবে রাস্তা করে দেওয়ার দাবী জানানো হয়েছে।
জানাগেছে, চলতি বছরে ‘মুজিব শতবর্ষ’ উপলক্ষে বদলগাছী উপজেলার আধাইপুর ইউনিয়নের সত্যপাড়ায় সরকারি জায়গায় গৃহহীনদের জন্য সরকার ২৯টি ইটের পাকা বাড়ি তৈরী করে দিয়েছে। গ্রামটি ‘গুচ্ছগ্রাম’ নামে পরিচিত। গত রমজানের রোজার আগে সেখানে ১৭টি পরিবার ওঠে বসবাস শুরু করে। গ্রাম থেকে প্রায় ২০০ ফুট দূরে উত্তর-দক্ষিণ ও পূর্ব-পশ্চিমে সরকারি রাস্তা। ওই রাস্তা থেকে গ্রামে প্রবেশের জন্য দক্ষিণ দিকে আমবাগান, উত্তর দিকে খলিয়ান ও পূর্বদিকে জঙ্গলের ভিতর দিয়ে তারা চলাচল করতো। গ্রামের চারপাশে ব্যক্তিমালিকানা জমি হওয়ায় সবদিক বাঁশের বেঁড়া দিয়ে তাদেরকে উত্তর দিকে খলিয়ানের ওপর দিয়ে চলাচল করতে বলা হয়। গুচ্ছগ্রামবাসীরা পায়ে হেঁটে চলাচল করতে পারলেও তাদের ভ্যান বাড়িতে নিতে পারে না। খলিয়ানের ওপর দিয়ে ভ্যান আসা-যাওয়া করলে জমির মালিকরা তাদের বিভিন্ন কথা শুনায়। গত ১৫দিন থেকে ভ্যান চালকরা তাদের ভ্যান বাড়িতে নিতে এবং অনেকে মালামাল বাড়িতে নিয়ে যেতে পারছে না। এতে সমস্যায় পড়েছেন গুচ্ছগ্রামবাসীরা। সমস্যাটি সমাধানে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।
গুচ্ছগ্রামের বাসীন্দা ভ্যানচালক জুয়েল হোসেন ও আফজাল হোসেন বলেন, ঈদের পরদিন গুচ্ছগ্রামের চারপাশে বাঁশের বেড়া দেওয়া হয়েছে। গ্রামে পায়ে হেঁটে প্রবেশ করতে পারলেও ভ্যান বাড়িতে নিয়ে আসা যাচ্ছে না। এজন্য প্রতিদিন ৫০টাকা ভাড়া দিয়ে গ্যারেজে রাখতে হচ্ছে। এতে তাদের সমস্যায় পড়তে হয়েছে।
গুচ্ছগ্রামের বাসীন্দা সোহেল, আকলিমা ও আছমা সহ অনেকেই বলেন, গত রমজানের রোজার আগে গুচ্ছগ্রামে উঠেছেন। একমাস চলাচলের কোন সমস্যা হয়নি। তবে ১৫/১৬দিন থেকে সমস্যায় পড়েছেন তারা। বাড়িতে ভ্যানে করে কোন মালামাল নিয়ে আসা যায় না। বাড়ি থেকে ভ্যান দুরে রেখেই মালামাল নিয়ে আসতে হয়। গ্রামে প্রবেশে সরকারি রাস্তা না থাকায় অন্যের খলিয়ানের ওপর দিয়ে চলাচল করায় আমাদের বিভিন্ন কথা শুনতে হয়। গুচ্ছগ্রামের প্রবেশে সরকারি ভাবে রাস্তা করে দেওয়ার দাবী জানান তারা।
জমির মালিকদের একজন আব্দুল লতিফ বলেন, গুচ্ছগ্রামের চারপাশে তাদের শরিকানদের জমি আছে। আগে গুচ্ছগ্রামের উত্তর ও দক্ষিণ পাশ দিয়ে তারা যাতায়াত করত। সেহেতু সবদিকে রাস্তা না দিয়ে গ্রামের উত্তরপাশ খলিয়ানের ওপর দিয়ে মানুষ চলাচলের জন্য রাস্তা দেওয়া হয়েছে। তবে ভ্যান চলাচল করতে দেওয়া হবেনা। কিভাবে তারা চলাচল করবে তারাই জানে।
বদলগাছী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. আলপনা ইয়াসমিন বলেন, বিষয়টি কেউ তাকে অবগত করেনি। তবে খোঁজ নিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে।