নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁ শহরের মুক্তিরমোড় এলাকার ইডেন চাইনিজ রেষ্টুরেন্টের শারীরিক প্রতিবন্ধী কর্মচারি আতাউর রহমান (৪৮)কে খুন হয়েছে। শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রেষ্টুরেন্টের তৃতীয় তলা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে সিআইডি। নিহত আতাউর রহমানের গ্রামের বাড়ি জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়ন চকশান্তি গ্রামের আহম্মদ মন্ডলের ছেলে। নিহত আতাউরের দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। তিনি ২৫বছর ধরে ওই রেষ্টুরেন্টে কাজ করে আসছিলেন। রেষ্টুরেন্টে খেতে আসা কাষ্টমারদের গাড়ি পাহাড়া দেয়ার পাশাপাশি রাতের বেলা রেষ্টুরেন্টের ভিতরে নৈশপ্রহীর কাজও করতো।
নিহত আতাউর রহমানের ছেলে রতন হোসেন জানান, আমার বাবা দীর্ঘ প্রায় ২৫বছর ধরে ইডেন রেষ্টুরেন্টের নৈশপ্রহরীর কাজ করছিল। গতকাল (শুক্রবার) রাত ১০টার দিকে শেষ আমার সাথে ফোনে কথা হয়েছে। কেমন আছি আমাদের পরিবারের খোঁজ নেয়ার জন্য ফোন দিয়েছিল। এর পর সকালে জানতে পারি বাবা আর নেই। রাতে বাবার সাথে বাদল নামে একজন কর্মচারি ছিল তিনি নাকি নাই এখন। বাবাকে মেরে ফেলার সাথে তিনি যুক্ত থাকতে পারেন।
নিহত আতাউর রহমানের পিতা আহম্মদ মন্ডল বলেন, আমার ছেলেটার বয়স প্রায় ৪৮বছর। কিন্তু সে দেখতো অনেক খোরবা অকৃতির ছিল (খাটো)। ২৫বছর ধরে এখানে কাজ করছে। রাতে শেষ বার আমার নাতির সাথে কথা হয়। সকালে জানতে পারি তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। আমার ছেলেটাকে কে মেরে ফেললো এটার সঠিক বিচার চাই।
স্থানীয় পদ্মা বাস কাউন্টারের কর্মচারী মোহন রানা বলেন, আতাউর ভাই খুব ভালো মানুষ ছিলেন অনেক বছর ধরে ইডেন রেষ্টুরেন্টে কাজ করে আসছিলেন। সকালে জানতে পারি তাকে কে বা কাহারা মেরে ফেলছে। এত সহজ-সরল মানুষকে কে মারলো এত নিষ্টুরভাবে আমরা হত্যাকারীর কঠিন শাস্তি চাই।
এবিষয়ে যৌথমালিকানাধীন ইডেন রেষ্টুরেন্টের মালিক পক্ষের কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
নওগাঁ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জুয়েল জানান, নিহত আতাউর রহমান এবং ওই রেষ্টুরেন্টের সহকারী রাধুনি বাদল রাতে একসঙ্গে ছিল। সকালে প্রধান রাধুনি রেষ্টুরেন্টে আসলে আতাউরের মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশ কে খবর দেয়। দুপুর ১২টায় রাজশাহী থেকে ফরেনসিক টীম ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
এ সময় ধারালো ছুরি দিয়ে শরীরজুড়ে খোঁচানোর চিহ্ন পাওয়া যায়। হত্যার পর মৃতদেহটি কাঁথা- বালিস দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। ঘটনার পর থেকেই ওই রেষ্টুরেন্টের রাধুনী বাদল পলাতক রয়েছে। রাজশাহী থেকে সিআইডির ফরেনসিক টিম এসেছে। তারা হত্যাকান্ডের স্থানসহ চারপাশে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করছেন। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আবদুল মান্নান মিয়া বিপিএম জানান, শহরের প্রানকেন্দ্রে এমন ঘটনা গুরুত্বের সাথে দেখছে পুলিশ। পাশাপাশি যৌথ তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ, সিআইডি ও পিবিআই।