নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁয় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এক সপ্তাহের বিশেষ লকডাউন চলছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন স্থানে ব্যারিকেট দিয়ে পুলিশের চেকপোষ্ট বসানো হয়েছে। পুলিশ নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করছে। বাস বন্ধ থাকলেও মানুষ পায়ে হেটে চলাচল করছে।
এদিকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমান আদালতে লকডাউন অমান্য করে চলাচল করা মোটরসাইকেল ও অন্যান্য যান(সিএনজি ও ভ্যান) জরিমানা করা হচ্ছে।
করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় জেলা প্রশাসক হারুন অর রশীদ সংবাদ সম্মেলন করে এক সপ্তাহের লকডাউনের ঘোষনা দেন। যা আগামী ৯জুন রাত পর্যন্ত এ লকডাউন চলবে।
নওগাঁ পৌরসভা ও জেলার নিয়ামতপুর উপজেলা করোনা সংক্রমনের হার বেড়েছে। নিয়ামতপুর উপজেলার পাশের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ। সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ায় সেখানে করোনা সংক্রমণের হার বেড়েছে। গত ৩০ মে জেলায় করোনা ভাইরাস সংক্রমনের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে এক স্মারকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। সেই নির্দেশনা মোতাবেক গত ১ জুন জেলার করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় করণীয় শীর্ষক এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সিদ্ধান্তক্রমে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধকল্পে ১৫টি নির্দেশনা গ্রহন করা হয়।
নওগাঁ পৌরসভা এবং নিয়ামতপুর উপজেলার সকল প্রকার গণপরিবহন (বাস, মিনিবাস, মাইক্রোবাস, সিএনজি, অটোরিক্সা, টমটম, রিক্সা, মোটর সাইকেল ইত্যাদি) বন্ধ থাকবে। এছাড়া জেলা শহরের সঙ্গে বাঁকী ১০ উপজেলায় যোগাযোগ থাকায় নওগাঁ পৌরসভাতেও সংক্রমণ বেড়েছে। এ কারণে জেলা শহরসহ অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লাপর বাস চলাচল বন্ধ করা হয়েছে।
পুলিশের পক্ষ থেকে শহরের বালুডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড, বাইপাস সড়ক, দয়ালের মোড়, মুক্তির মোড়, তাজের মোড়, ঢাকা বাসস্ট্যান্ড সহ অন্যান্য মোড়ে মোড়ে ব্যারিকেট দিয়ে পুলিশের চেষ্টপোষ্ট বসানো হয়েছে। অপ্রয়োজনে যারা ঘুরাঘুরি করছে তাদের বাসায় ফেরত পাঠানো হচ্ছে।
শহরের জনকল্যাণ মহল্লার বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন রিকশা চালক বয়জৈষ্ঠ্য হোসেন আলী। তিনি বলেন, বাড়িতে ৫জন সদস্য। লকডাউনে রাস্তায় রিকশা নিয়ে বেরিয়েছি। সকাল থেকে ১০০ টাকা ভাড়া হয়েছে। এরমধ্যে পুলিশ একবার দয়ালের মোড়ে ধরে বুঝিয়ে বাড়ি যেতে বলেছে। বাড়িতে বসে থাকলে তো আ। পেট চলবে না। মুল রাস্তায় না গিয়ে শহরের শাখা রাস্তায় থাকছি। লকডাউনে যাত্রীও কম হচ্ছে।
নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) কে.এম.এ মামুন খান চিশতী বলেন, লকডাউন ঘোষণার পর থেকেই সরকারের দির্দেশনা অনুযায়ী পুলিশ প্রশাসন মাঠে কাজ করে যাচ্ছে। জরুরী প্রয়োজন ছাড়া যারা বাহিরে বের হচ্ছেন তাদের কঠোর ভাবে বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য বলা অনুরোধ করা হচ্ছে।
এছাড়া যারা প্রয়োজন ব্যতিত যানবাহনে যাতায়াত করছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। তবে আমরা সবাইকে অনুরোধ করছি কেউ যেন প্রয়োজন ছাড়া বাহিরে বের না হয়। নিত্য প্রয়োজনীয় দোকানপাট ছাড়া যেন অন্য কোন দোকানপাট খুলে না রাখে সেদিকেও বিশেষ নজরদারী করা হচ্ছে।