শহিদুল্লাহ সরকার, সাভার থেকে
মাশরুম একটি সম্ভাবনাময় ফসল। আমাদের দেশে ও বিদেশে মাশরুমের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ব্যাপক মাশরুম চাষের মাধ্যমে দেশে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। দেশে মাশরুমের চাষ সম্প্রসারণ করতে প্রকল্প গ্রহণের কাজ চলছে।
রোববার সকালে সাভারে মাশরুম উন্নয়ন ইনস্টিটিউটে মাশরুম চাষি ও উদ্যোক্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে সাংবাদিকদেরকে এসব কথা বলেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।
এ সময় কৃষিমন্ত্রী বলেন, অর্থকরী ফসল মাশরুম চাষের সম্ভাবনা অনেক বেশি। এই সম্ভাবনাকে সর্বোচ্চ কাজে লাগাতে হবে। ইতোমধ্যে মাশরুমের উন্নত জাত ও চাষের প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হয়েছে। এখন সারা দেশে দ্রুততার সঙ্গে কৃষক ও উদ্যোক্তা পর্যায়ে সম্প্রসারণ এবং জনপ্রিয় করার জন্য উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের কাজ চলছে।
দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের কৃষিবান্ধব নীতি ও নানা প্রণোদনার ফলে বিগত ১২ বছরে কৃষিতে বিস্ময়কর সাফল্য অর্জিত হয়েছে। দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। সরকারের এখন লক্ষ্য কৃষিকে বাণিজ্যিকীকরণ ও লাভজনক করা এবং সকলের জন্য পুষ্টিসম্মত খাদ্য নিশ্চিত করা। এক্ষেত্রে মাশরুমের সম্ভাবনা অনেক। এটির চাষ সম্প্রসারণ ও জনপ্রিয় করতে পারলে তা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখতে পারবে। দেশে লাখ লাখ শিক্ষিত বেকার যুবক রয়েছে যারা চাকরির জন্য চেষ্টা করছে। তাদেরকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উদ্যোক্তা করতে পারলে মাশরুমের স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজার তৈরি হবে। অন্যদিকে, মাশরুম অত্যন্ত পুষ্টিগুণ সম্পন্ন হওয়ায় সহজেই মানুষের পুষ্টি চাহিদার অনেকটা পূরণ হবে।
জানা যায়, মাশরুম উন্নয়ন ইনস্টিটিউট এ পর্যন্ত বিদেশ থেকে মাশরুমের ১৬২টি জাত দেশে এনেছে। দেশের পাহাড়ি ও বনাঞ্চল থেকেও ১৪০টি জাত সংগ্রহ করা হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. আসাদুল্লাহের সভাপতিত্বে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ) মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল, সাভার উপজেলা চেয়ারম্যান মঞ্জরুল আলম রাজিব, পৌর মেয়র আব্দুল গণি, অতিরিক্ত সচিব হাসানুজ্জামান কল্লোল, সাভার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাজহারুল ইসলাম। এছাড়াও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বিভিন্ন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া ‘বাংলাদেশে মাশরুম চাষের প্রয়োজনীয়তা, সুযোগ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মাশরুম উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের উপ-পরিচালক ফেরদৌস আহমেদ।
দেশে প্রতি বছর প্রায় ৪০ হাজার মেট্রিক টন মাশরুম উৎপাদন হচ্ছে, যার আর্থিক মূল্য প্রায় ৮০০ কোটি টাকা। এছাড়া প্রায় দেড় লাখ মানুষ মাশরুম ও মাশরুমজাত পণ্য উৎপাদন এবং বিপণনে যুক্ত রয়েছেন। মাশরুম উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের বরাতে এ তথ্য জানায় কৃষি মন্ত্রণালয়।
Comments
comments