নরসিংদী হতে মোস্তাক আহমেদ:
নরসিংদী জেলা প্রশাসক হিসেবে তিন বছর ৩ মাস অতিক্রান্ত হওয়ার পর সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের উপ-সচিব হিসেবে পদায়িত হওয়ায় নরসিংদীর জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দা ফারহানা কাউনাইনকে যৌথভাবে আনুষ্ঠানিক শ্রদ্ধা অভিনন্দন প্রদান করেছে নরসিংদী প্রেসক্লাব ও নরসিংদী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সংবর্ধিত অতিথি জেলা প্রশাসককে ফুলেল শুভেচ্ছা, ক্র্যাস্ট ও বই উপহার দিয়ে সংবর্ধনা জ্ঞাপন করেন নরসিংদী প্রেসক্লাব ও চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের নেতৃবৃন্দ।
শনিবার নরসিংদী শিশু একাডেমি মিলনায়তনে এ সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
নরসিংদী প্রেসক্লাবের সভাপতি মাখন দাস ও নরসিংদী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রেসিডেন্ট আলী হোসেন শিশির সিআইপির যৌথ সভাপতিত্বে সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন- নরসিংদী ড্রিম হলিডে পার্কের সত্ত্বাধিকারী ও শিল্পপতি প্রবীর কুমার সাহা, রমণী গ্রুপের সত্ত্বাধিকারী শিল্পপতি নিজাম উদ্দিন ভূইয়া লিটন (সিআইপি) চেম্বার অব কমার্সের ভাইস-প্রেসিডেন্ট জাকির হোসেন, নরসিংদী প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সভাপতি নিবারণ রায় ও প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহসভাপতি একে ফজলুল হক, সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল পারভেজ মন্টি, সহ-সাধারণ সম্পাদক হামিদুল হক আহাদ,নরসিংদী চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক আনিসুর রহমান প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের সংবর্ধিত প্রধান অতিথি নরসিংদীর জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন নরসিংদীতে দীর্ঘ সময়কাল তার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনে তাকে সহযোগিতা করায় নরসিংদীবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তার সকল কৃতিত্ব নরসিংদীবাসীর বলে উল্লেখ করেন।
নরসিংদীতে জেলা প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দিয়ে পাঠানোর জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ।প্রধান অতিথি বলেন আমি এ জেলায় চয়েজ দিয়ে আসি নাই। যারা চয়েজ দিয়ে আসে আমি তাদের দলে নই। আমার কর্মগুণেই এখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দিয়ে এখানে পাঠিয়েছেন। শুধু এখানেই নয়, যেখানেই পদায়িত হয়েছি- সেখানেই আমার কর্মগুণে হয়েছি। অন্যান্যদের সাথে এখানেই আমার ভিন্নতা বা পার্থক্য। এ আদর্শ আমি পারিবারিকভাবেই আমার বাবার কাছ থেকে গ্রহণ করেছি।
নরসিংদী আবার আসার জন্যে বক্তাদের আবেদনের জবাবে জেলা প্রশাসক সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন বলেন, ভিন্ন পরিচয়ে আমি নরসিংদীতে আবার ফিরে আসতে চাই না। সরকারিভাবে কোন দায়িত্ব পেলে তবেই আসব। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন। ঢাকায় এলে আপনাদের সাথে দেখা হবে। ঢাকায় গিয়ে নরসিংদীতে অহরহ এসে অধস্তনদের কাজের বেঘাত ঘটাতে আমি চাই না। আমার সহকর্মী যারা আছে তাদের প্রতিও আমার উপদেশ থাকবে দায়িত্ব না পেয়ে অযথা পুরনো কর্মস্থলে বিচরণ করা উচিত নয়। এতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের কাজে বাধার সৃষ্টি হয়।
প্রেসক্লাবের তালা খুলে দেয়ার ব্যাপারে ক্লাবের সদস্যদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, গণমাধ্যমের গলা টিপে আমরা সামনে এগিয়ে যাব এমন লোক আমি নই। দায়িত্ব বলেই আমি প্রেসক্লাবের তালা খুলে দিয়েছিলাম। নরসিংদীর গণমাধ্যম যেন সারাদেশের জন্য অনুকরণীয় হয় আপনারা সেভাবেই কাজ করুন।নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করুন।
চেম্বার সভাপতি আলী হোসেন শিশির জেলা প্রশাসক সৈয়দা ফারহানা কাউনাইনকে নরসিংদীর আলোক বর্তিকা উল্লেখ করে বলেন, নিরঙ্কুশ নির্বাচনের মাধ্যমে নরসিংদী চেম্বারে সুন্দর পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য নরসিংদীর ব্যবসায়ী সমাজ আপনার কাছে ঋণী। আপনি প্রশাসনের সর্বোচ্চ পদ ‘কেবিনেট সেক্রেটারি’ পদে পদায়িত হবেন- এই কামনা করি। চাকরি শেষে জনপ্রতিনিধি হয়ে দেশসেবায় নিয়োজিত হবেন বলেও আমরা আশাবাদ ব্যক্ত করছি।
প্রেসক্লাবের সভাপতি মাখন দাস অতিথির উদ্দেশ্যে বলেন, ২৩ বছরের সাংবাদিকতায় আপনার মতো প্রিয় জেলা প্রশাসক আমি পাইনি। আপনি একজন আলোকিত মানুষ। আপনি সারাজীবনের জন্যে আমাদের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন,আমাদের মাথাগুজার ঠাঁই করে দিয়েছেন আপনাকে আমরা ভুলব না।
প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল পারভেজ মন্টি বলেন, নরসিংদীর জেলা প্রশাসক সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন মহোদয় একজন বিরল গুণের মানুষ। তার মধ্যে কোন নিগেটিভ মনোভাব ছিল না। তিনি পজিটিভ মানুষ।তার পরে যিনি নরসিংদীতে আসবেন তাকে অনেক কাজ করতে হবে সৈয়দা ফারহানা কাউনাইনকে ওভারটেক করতে।
শেষে ক্লাবের পক্ষ থেকে সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল পারভেজ মন্টি জেলা প্রশাসককে ক্রেস্ট এবং মূল্যবান বই উপহার দেন।