রেজওয়ানুল ইসলাম বাপ্পি :: ঝিনাইদহ শহরের পাগলাকানাই মোড়ে দারুল আমাল কওমি মাদ্রাসায় টানা সাতদিন ধরে বলাৎকারের শিকার হয়েছে ৯ বছরের এক শিক্ষার্থী। এমন অভিযোগ করেছে শিক্ষার্থীর বাবা।
এই অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার রাতে এক শালিস বৈঠক করেছে মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মোহাম্মদ উল্লা ও শিক্ষক বৃন্দ ও অভিভাবক সদস্যরা। অভিযুক্ত শিক্ষক ইসরাফিল হোসেনকে মাদ্রাসা চাকরিচ্যুত করেছে বলে জানান কর্তৃপক্ষ।
ইসরাফিল হোসেন যশোরের মণিরামপুর উপজেলার ভরতপুর গ্রামের আব্দুল কাদের শেখের ছেলে। ঝিনাইদহ শহরের পাগলাকানাই মোড়ের সায়াদাতিয়া জামে মসজিদের পাশে মাদ্রাসাটি দীর্ঘদিন পরিচালিত হয়ে আসছে।
বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী এই মাদ্রাসায় আবাসিক-অনাবাসিক ভাবে লেখাপড়া করছে। নিপিড়নের শিকার শিক্ষার্থীর বাড়ি ঝিনাইদহ শহরের আরাপপুরে।
শিক্ষার্থীর বাবা সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, গত ৩০ আগস্ট মাদ্রাসা ছুটি ঘোষণা করা হয়। এই ছুটিতে ঝিনাইদহ শহরের আরাপপুরে বাড়িতে যেয়ে আবার মাদ্রাসা চালু হলে আসতে চাচ্ছিল না। ৩ বছর যাবত এই শিক্ষার্থী দারুল আ’মাল মাদ্রাসায় পড়াশোনা করছে। কিন্তু এখন হটাৎ করে না আসতে চাইলে কারণ জানতে চায় শিশুটির বাবা-মা।
শিশুটি তার বাবা-মাকে জানায়, ইসরাফিল হোসেন প্রায়ই তাকে জড়িয়ে আদর করে। চুমা দেয়। মাদ্রাসাটি সিসি ক্যামেরায় ঘেরা। বাথরুমে ক্যামেরা নেই। সুযোগ বুঝে বাথরুমে নিয়ে গিয়ে তাকে বলাৎকার করে ঐ শিক্ষক। এই ভয়ে সে মাদ্রাসায় আসতে চায় না। শনিবার সন্ধ্যায় শিশুটির বাবা মাদ্রাসা সংলগ্ন পাগলাকানাই মোড়ের দোকানদারদের কাছে কাঁদতে কাঁদতে এই কথা জানিয়ে বিচার দাবি করেন।
সাংবাদিকদের কাছে দারুল আ’মাল মাদ্রাসা অধ্যক্ষ মোহাম্মদ উল্লাহ জানান, ইসরাফিল হোসেন ১ মাসের মত যোগদান করেছে। বাড়িতে তার বউ আছে। সে যৌন নিপিড়ন করেছে বলে অভিযোগ পেয়েছি। আমরা তাকে চাকরিচ্যুত করছি। তাকে আর রাখবো না। মাদ্রাসায় ইসরাফিল হোসেনের খোঁজ করতে গেলে জানাযায় তিনি পালিয়েছেন।
মাদ্রাসার অন্য অবিভাবকদের দাবি এই শিক্ষক অন্য ছাত্রদেরও যৌন নিপিড়ন করে থাকতে পারে। তিনি ধর্মের দোহাই দিয়ে চুমু খাওয়া জায়েয বলে প্রায় বাচ্চাদের জড়িয়ে ধরেন ও যৌন নিপিড়ন করেন বলে জানান বিভিন্ন অভিভাবক বৃন্দ।
এই ঘটনায় ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ সোহেল রানা বলেন, কেউ আমাদের কাছে অভিযোগ করেনি। এখনই খোঁজ নিচ্ছি। সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে ঘটনা স্থলে পুলিশ গেলে মাদ্রাসায় অভিযুক্ত শিক্ষক কে খুঁজে পাওয়া যায় নি বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা এস আই মোখলেছুর রহমান।