গাজীপুর থেকে হামিদ খান ঃ
গাজীপুর মহানগরের বোর্ড বাজার এলাকার ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও হাজী মহর খান ওয়াকফ এস্টেট এর পরবর্তী মোতাওয়াল্লী হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে যাচ্ছেন গাছা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সফল মেম্বার, বোর্ডবাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও খান পরিবারের অত্যন্ত অভিজ্ঞ এবং মার্জিত, খান পরিবারের অত্যন্ত প্রিয় মুখ আলহাজ্ব মোঃ মজিবর রহমান খান।
এর পূর্বে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন ঐতিহ্যবাহী খান পরিবারের অপর সদস্য সাবেক গাছা ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার আলহাজ্ব গিয়াস উদ্দিন আহমেদ খান। তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ এ দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। সমপ্রতি তিনি কিডনি, উচ্চ রক্তচাপ সহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ চিকিৎসাধীন ছিলেন। অবশেষে জটিল রোগের সাথে হার মেনে গেল ২৩ আগষ্ঠ ২০২১ ইং সকলকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেছেন।
তার এই হঠাৎ করে চলে যাওয়াতে বোর্ড বাজার কেন্দ্রীয় মসজিদের মোতাওয়াল্লীর পদে ও হাজী মোহর খান ওয়াকফ এস্টেট এর দায়িত্বে এক ধরনের শূন্যতা সৃষ্টি হয়। আলহাজ্ব গিয়াস উদ্দিন মেম্বার এর দ্বিতীয় ছেলে সুজন খান এ দায়িত্ব পালন করতে থাকলেও খান পরিবারের অধিকাংশ সদস্যই সেটা মেনে নিতে নারাজ। কারণ হিসেবে খান পরিবারের সদস্যরা যুক্তি দেখাচ্ছেন যে, সুজন খান, খান পরিবারের অনেক কনিষ্ঠ সন্তান। পরিবারে তার বড় ভাইরা রয়েছেন, আলহাজ্ব মজিবুর রহমান খান সহ তার চাচাদের মধ্যে অনেকে এখনও জীবিত রয়েছেন যারা এই গুরুদায়িত্ব পালন করতে অনেক বেশি যোগ্য এবং খান পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠ সন্তান।
সুতরাং খান পরিবারের যোগ্য এবং বয়স্কদের রেখে সুজন খান কোনমতেই এই দায়িত্ব পালন করার অধিকার রাখেন না। কারণ মোহর খান ওয়াকফ এস্টেট এর গঠনতন্তে বলা আছে, পরিবারের জিনি সবচেয়ে বেশি যোগ্য, ধার্মিক এবং জ্যৈষ্ঠ তিনি মসজিদের মোতাওয়াল্লী সহ ওয়াকফ এস্টেট এর দায়িত্ব পালন করবেন।
কিন্তু বিধির তোয়াক্কা না করে দীর্ঘদিন যাবৎ দায়িত্ব নিয়ে মোতাওয়াল্লী পরিবারের মধ্যে টানাপড়েন চলে আসছিল। বিষয়টি মীমাংসার জন্য বুধবার দুপুরে মোতাওয়াল্লী পরিবারের সকল সদস্যদের নিয়ে বোর্ডবাজারস্থ মোতাওয়াল্লীর অফিসে গাজীপুর জেলার ওয়াকফ এস্টেটের প্রধান পরিদর্শকের নেতৃত্বে এক জরুরি বৈঠকে বসেন। বৈঠকে প্রধান পরিদর্শক আলহাজ্ব মজিবুর রহমান খানের দেওয়া একটি দরখাস্ত এবং সুজন খানের দেওয়া অপর একটি দরখাস্ত সকলকে পড়ে শোনান। পরবর্তীতে খান পরিবারের অধিকাংশ সদস্য এ বিষয়ের উপর আলোচনা করেন এবং সুজন খান সহ অধিকাংশ সদস্য গণ পরবর্তী মোতাওয়াল্লী হিসেবে আলহাজ্ব মজিবুর রহমান খানের নাম প্রস্তাব করেন।
সকলের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে সুজন খান নিজেও তার দায়িত্ব আলহাজ্ব মজিবুর রহমান খানকে দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন এবং সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। সকল বিষয়ে পর্যালোচনা শেষে পরিদর্শক বলেন, বিষয় টি নিয়ে আরো একাধিক বার আমাদের বসতে হবে। তিনি সুজন খানের নিকট বিগত দিনের হিসাবের সকল কাগজপত্র চান এবং বলেন এই মসজিদ এবং ওয়াকফ এস্টেট আল্লাহর রাস্তায় ধান করা ধর্মীয় সম্পদ। এর রক্ষণাবেক্ষণ করা আমাদের সকলের দায়িত্ব। তিনি বলেন, পরবর্তী সভায় আমরা একটি সুন্দর সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারবো ইনশাল্লাহ।
সভায় আলহাজ্ব মজিবুর রহমান খান বলেন, আমাদের পূর্ব পুরুষ গণ এই মূলবান সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় দাম করে গিয়েছেন। এটিকে সঠিকভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করে জান্নাত লাভ করতে পরবো। আর যদি তা না করে সেটি ভোগ দখলের চিন্তা করি তাহলে অবশ্যই মহান আল্লাহর কাঠ গড়ায় আমাদের দাঁড়াতে হবে এবং দোজখের আগুনে জলতে হবে। সুতরাং আমি খান পরিবারের ছোট বড় সকলকে নিয়ে এই মসজিদ এবং ওয়াকফ এস্টেট পরিচালনা করতে চাই।এই বিষয়ে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন খান পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্য মোঃ মোতালেব খান, বীর মুক্তিযুদ্ধো ইউনুস খান বাদল, মতিউর রহমান খান, মোঃ মনির খান, মোঃ আঃ আজিজ খান, মোঃ শাহিন খান, ইঞ্জিনিয়ার আলহাজ্ব মাসুদ খান, রুবেল খান মন্টু, মোঃ জুয়েল খান, এ্যাডঃ আবু সাইদ খান, মোঃ সবুজ খান, মোঃ সুমন খান, সুজন খান, রাজন খান সহ বোর্ডবাজারের ব্যবসায়ী বৃন্দ,এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সহ আরো অনেকে।