স্টাফ রিপোর্টার :: বিখ্যাত গণিতবীদ কে.পি বসুর স্মৃতি বিজড়িত ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হরিশংকরপুর ইউনিয়নের বাদামতলা বাজার। মূলত: বাজারের একটি বাদাম গাছকে কেন্দ্র করে নবগঙ্গা নদীর কূল ঘেঁষে গড়ে উঠেছে একটি বাজার ও একটি সভ্যতা।
লোকমুখে এলাকার বিভিন্ন বয়স্কদের কাছ থেকে এটাই জানা যায় এই বাজারটির বিষয়ে।
ঝিনাইদহ জেলা শহর থেকে বাজারটির দূরুত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার। এই বাজারকে ঘিরে গড়ে উঠেছে নানা রকম প্রতিষ্ঠান বাজারে পাশেই নদীর কূল ঘেঁষে দাড়িয়ে আছে বৃটিশ আমলের একটি ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ।
এখানে আছে মসজিদ, মন্দির ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, হাসপাতাল,ভূমি অফিস সহ নানা রকম সরকারী, বেসরকারী বহু প্রতিষ্ঠান।
মূলত: হরিশংকরপুর ইউনিয়নের প্রাণ কেন্দ্র বলা চলে এই বাদামতলার বাজার। এই বাজার কে ঘিরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সভা, সমাবেশ হয়ে থাকে এখানে। বহু রাজনৈতিক জনসভার স্বাক্ষী বহন করে এই বাদামতলা বাজার।
এক সময়ের হরিশংকরপুর গ্রামের ধনাঢ্য বোশ পরিবার এই বাজারের অনেক জায়গা দান করে। মূলত বাজারের জমি গুলোর মালিক হিন্দু পরিবার হওয়াতে বাজরের পাশের জমি গুলো রেখে ভারতে চলে গেছে অনেকেই।
দীর্ঘদিন ভারতে বসবাস করাতে সরকারি ১ নাম্বার খাস খতিয়ানে রেকর্ড হয়ে যায়। তবে বাদামতলা বাজারের দীর্ঘদিনের সেই ঐতিহ্য আজ হারাতে চলেছে।
৫০০ বছরের পুরাতন সেই ঐতিহ্যবাহী বাদাম গাছটি কিছু বিবেকবোধ হীন লোকের কারনে আজ প্রায় বিলুপ্তির পথে। সরকারি ও নদীর জায়গা দখল তৈরি হচ্ছে বাজারে নানা অবৈধ স্থাপনা। অথচ বাজারের সাথেই স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ি।
গাছ কর্তনের খবরটি মোবাইলে সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার এস এম শাহীনকে জানলে তিনি ব্যাবস্থা নিবেন বলে জনান।
ঘটনাস্থলে ঝিনাইদহ সদরের এসিল্যান্ড ও হরিশংকরপুর ইউনিয়নের ভূমি কর্মকর্তা মতিয়ার রহমান গিয়ে সেখানে গাছ কাঁটা বন্ধ করেন এবং নদীর কূলবর্তী অবৈধ স্থাপনা বন্ধের নির্দেশনা দেন।
ইউনিয়নবাসীর কাছে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এভাবেই হরিশংকরপুর ইউনিয়ন থেকে শত বছরের বহু পুরাতন বটগাছ, কাঁঠাল গাছ থেকে নিম গাছ থেকে শুরু করে বাদ যায়নি কোন গাছই। এমনকি ওই এলাকার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের সবুজ প্রঙ্গান থেকেও কেটে নেওয়া হয়েছে এরকম শতশত গাছ। মূলত গাছ গুলো কেটে নিয়েছে এলাকার একটি প্রভাবশালী মহল তাদের এক ঐশ্বরিক ক্ষমতা বলে।
স্থানীয় জনসাধারণের দাবি তারা প্রশাসনের কাছে বললে বলে অপরাধ করলে শাস্তি হবে গাছ নিলামে উঠবে আরো কতো কি এসব কোন কথায় কাজে আসেনা বলেন তারা। তবে এতো কিছুর পরেও বিচারের বাইরে থেকেই যায় এসব প্রভাবশালী গাছ খেকোরা। হরিশংকরপুর ইউনিয়নের অনেকেই বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
তারা বলেন, এই ইউনিয়নের সামাজিক রাজনৈতিক গ্রুপিং এর সুযোগ নিয়ে প্রায়ই রাতের আঁধারে এমনকি দিনে দুপুরে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে এই সব বড় বড় সরকারি গাছ কেটে নেয় প্রভাবশালী একটি মহল। তারা সকলেই সাবেক এক চেয়ারম্যানের সমর্থক। এলাকায় তাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না।
আমাদের অনুসন্ধানী টিম স্বরজমিনে গিয়ে দেখতে পান এই সব গাছ কাঁটার বহু সত্য ঘটনা। ওই ইউনিয়নের বাকড়ী বাজারের একটি কাঁঠাল গাছ একই বাজেরর একটি ৫০০ বছরের পুরাতন নিম গাছ আম গাছ সহ অনেক প্রাচীন কালের স্বাক্ষী বহনকরা গাছগুলো কেটে নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া ওই ইউনিয়নের আর্য- নারায়ণপুর তিন রাস্তার মোড় থেকে একটি বটগাছ কেটে নিয়েছে গাছ খেকোরা।
এলাকা বাসীর দাবি জানান স্থানীয় প্রশাসনের কাছে। এখনও এই ইউনিয়নে বেশকিছু শত বছরের পুরাতন গাছ আছে সেই গাছ গুলোর রক্ষার দাবি জানান তারা