মো: সোহেল মিয়া ( গাজীপুর )
গাজীপুর মহানগরের গাছা মেট্রো থানাধীন বোর্ডবাজার,বড়বাড়ী,সাইনবোর্ড, মালেকেরে বাড়ীসহ আশপাশ এলাকার অলিগলিতে গড়ে উঠেছে নাম সর্বস্ব ক্লিনিক ও ডায়গনষ্টিক সেন্টার। অনুমোদনবিহীন এসব ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে প্রায়ই রোগীরা অপচিকিৎসার শিকার হচ্ছেন। আবার পরীক্ষা-নিরীক্ষার মান নিয়ে অভিযোগ উঠছে হরহামেশায়। সংশ্লিষ্ট বিভাগের নজরদারির অভাবকে দুষছেন ভুক্তভোগীরা। এক কথায় চিকিৎসা সেবার নামে চলছে ভয়াবহ নৈরাজ্য।
সরকারি হাসপাতালের ডাক্তাররা নিয়ম-নীতির কোন তোয়াক্কা করেন না, প্রাইভেট হাসপাতালে চলছে শুধুই বাণিজ্য। চিকিৎসা সেবা নিতে পদে পদে হয়রানির শিকার হচ্ছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা । সরকারি হাসপাতাল গুলোতে ওষুধ কোম্পানি গুলোর প্রতিনিধিদের আধিপত্য ও দাপটে ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হয়। যেন দেখার কেউ নেই। সরেজমিনে খোজ নিয়ে জানা গেছে, শুধু হাসপাতাল নয়,ডায়াগনষ্টিক সেন্টার গুলোতে আরো ভয়াবহ অবস্থা।
এখানে চিকিৎসকদের কমিশনের জন্য সমানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো হয়। আদৌ এসব পরীক্ষার প্রয়োজন আছে কিনা তা কেউ দেখেন না। এদিকে অনেক ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে পরীক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্রপাতির মান নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। এসব ডায়গনষ্টিক সেন্টার গুলোতে কমপক্ষে একজন ল্যাব টেকনোলজিষ্ট ও একজন টেকনিশিয়ান থাকার বাধ্যবাদকতা থাকলেও এর অধিকাংশ ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে নেই অভিজ্ঞ ল্যাব টেকনোলজিষ্ট ও টেকনিশিয়ান। বোর্ডবাজার এলাকায় নাসিমা ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে , এ প্রতিষ্ঠানে করানো হয় এমআর ডিএন্ডসির মতো ঝুঁকিপূর্ণ কাজ। এই প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার আব্দুর রাজ্জাক তিনি নিজেই ল্যাব টেকনিশিয়ান ও এক্সরে রেডিউলজিষ্ট। জনমনে প্রশ্ন একজন ব্যক্তি একটি র্স্পশকাতর, একটি প্রতিষ্ঠানের তিনটি কাজ সে একাই কিভাবে করেন ?
আবার বেশির ভাগ ডাক্তাররাই ব্যস্ত নিজেদের তৈরি করা হাসপাতাল নিয়ে। প্রায় সবাই প্রাইভেট প্র্যাকটিস করেন বিভিন্ন ক্লিনিকে। এ কারনে সরকারি হাসপাতাল গুলোতে চিকিৎসকরা নিজেরাই রোগীদের বলেন, এখানে ভালো অবস্থা নেই অমুক ক্লিনিকে আসুন সেখানে আমি ভালো ভাবে দেখে দিতে পারবো। অসহায় রোগীরা ডাক্তারদের সে কথাই শোনেন। ভুক্তভোগীরা বলছেন,সরকারের কার্যকর মনিটরিংয়ের অভাবে অপচিকিৎসার ভয়াবহতা বাড়ছে। অপরদিকে নগরীর বিভিন্ন স্থানে গজিয়ে উঠা হাতুড়ে ডেন্টিস্টরা প্রতিদিন ঝুঁকিপূর্ণ উপায়ে অসংখ্য মানুষের দাঁতের চিকিৎসা করছেন। এতে দাঁতের রোগীরা দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে আক্রান্ত হচ্ছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এব্যপারে গাজীপুর ডায়াগনষ্টিক ওয়ার্নাস এসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক মো. আব্দুর রহমান বলেন,নগরীতে প্রায় ৩ শতাধিক ক্লিনিক ও দেড় শতাধিক ডায়গনষ্টিক সেন্টার রয়েছে। এর অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের নেই কোন লাইসেন্স। অনেকের লাইসেন্স থাকলেও তারা নবায়ন করেননি। এ বিষয়ে সিভিল সার্জন অফিসে আমাদের কথা হয়েছে, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে অভিযান পরিচালনা করা হবে।