মো. আব্দুল হামিদ খান ( গাজীপুর ) :
গাজীপুরে পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রী ও ছেলেকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগের ২৪ ঘন্টার মধ্যেই রিকশাচালক মফিজ উদ্দিনকে গ্রেফতার করেছে গাছা থানা পুলিশ। গত সোমবার দিনগত মধ্যরাতে ঢাকার নয়াটোলা আমবাগ থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। মফিজকে গ্রেফতারে ব্যবহার করা হয় আধুনিক প্রযুক্তি। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) গাছা জোনের সহকারী কমিশনার আহসানুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
আহসানুল হক জানান, রোববার রাতে স্ত্রী ও সন্তানকে হত্যা করার পর গাজীপুরের বাসা থেকে পালিয়ে আক্তারের রিক্সার গ্যারেজে আশ্রয় নেন মফিজ। পুলিশের চোখ ফাঁকি দিতে দাঁড়ি ছেটে লেবাস পরিবর্তন করেন তিনি।
পুলিশের এ কর্মকর্তা জানান, ঘটনার পর পালিয়ে যাওয়ার সময় মফিজ তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ঘটনাস্থলে ফেলে যান। তাঁর কোনো ছবি বা আইডি কার্ড না পাওয়ায় তাঁকে খুঁজতে বেগ পেতে হয়। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের গাছা থানার পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত অফিসার নন্দলাল চৌধূরীর নেতৃত্বে একটি চৌকস টিম মফিজের খোঁজে তাঁর গ্রামের বাড়ি ইদুরপুর, থানা মধুপুর জেলা টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহের শ্বশুরবাড়ির এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়।
এ বিষয়ে গাছা থানার পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত অফিসার নন্দলাল চৌধূরী জানান, ঘটনার পর ঘটনাস্থলে মফিজের কোন ছবি না পাওয়ায় তার খোঁজে ফোর্স নিয়ে তাঁর গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর থানাধীন ইদুরপুর গ্রামে যাই, সেখানেও তার কোন ছবি না পেয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারি একটি এনজিও থেকে তিনি লোন নিয়েছিলো , অনেক খোজা খুজির পর জানতে পারি আশা এনজিও থেকে তিনি ২০১৯ সালে একটি লোন নিয়েছিলো, তখন সেই এনজিও থেকে তার ছবি সংগ্রহ করে পাঠাই ঢাকায় থাকা আমাদের আরেক টিমকে।
এক পর্যায়ে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে জানা যায়, আগে মফিজ নয়াটোলা এলাকায় থাকতেন। অনুমানের ওপর ভর করে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) গাছা জোনের সহকারী কমিশনার আহসানুল হক এর নেতৃত্বে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গাছা থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই মোশারফ হোসেন ও সংগীয় উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহ্ ফরিদ এবং সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. জসিমসহ পুলিশের একটি চৌকস টিম তাঁর খোঁজে সোমবার মধ্যরাত পর্যন্ত ঢাকার শতাধিক রিক্সা গ্যারেজে অভিযান চালায়। পরে রাত সাড়ে ১১ টায় নয়াটোলা আমবাগের একটি রিক্সার গ্যারেজ থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গাছা থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই মোশারফ হোসেন জানান, রোববার রাত সাড়ে ১২ টার দিকে মা ছেলেকে কুপিয়ে হত্যার পর ঘাতক মফিজ পালিয়ে যায়, এর পর থেকে আমাদের একাদিক চৌকস টিম তাকে বিভিন্ন জায়গায় খোজা খুজি করে, অভিযোগের প্রায় ২৩ ঘন্টার মধ্যেই আমরা তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষ্যম হয়েছি, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যার ঘটনা শিকার করে জানান, পারিবারিক কলহের জেরে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন, তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বনিবনা হতোনা, বাবা মায়ের কথা কাটা কাটি হলে ছেলে এসে বাবার উপর চরাও হতো, তাই ক্ষোভে সেদিন স্ত্রী-সন্তান ঘুমন্ত থাকা অবস্থায় সবজি কাটার বটি দা দিয়ে প্রথমে স্ত্রী ও পরে ছেলেকে হত্যা করেন, আমরা তাকে মঙ্গলবার আদলতে প্রেরন করেছি।