ইলিয়াস কামাল বাবু ::
চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় জ্ঞাত আয় বহির্ভূত প্রায় ১ কোটি ২৮ লক্ষ ১৫ হাজার টাকা মুল্যের ৮ গন্ডা জায়গা স্ত্রীর নামে ক্রয় করায় সন্দ্বীপ সাব রেজিস্ট্রি অফিসের অফিস সহকারী মাহফুজুর রহমান কে চাকুরী থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
গত ১৭/০৫/২০২২ খ্রিঃ চট্টগ্রাম জেলা রেজিস্ট্রার মোঃ মনিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত
এক পত্রে এ সংক্রান্ত এক আদেশ দেয়া হয়।
আদেশে উল্লেখ করা হয়, চট্টগ্রামের নানুপুর সাব রেজিস্ট্রি অফিসে অফিস সহকারী হিসেবে মাহফুজুর রহমান কর্মরত থাকাবস্থায় জনৈক আব্দুর রহিম নামক এক ব্যাক্তির লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে
জেলা রেজিস্ট্রার তার বিরুদ্ধে তদন্তের ভার দেন চট্টগ্রাম পাহাড়তলীর সাব রেজিস্ট্রার আনিছুর রহমান কে।
তদন্তে বেড়িয়ে আসে চট্টগ্রামের ৫ টি জায়গায় খন্ড খন্ড ভাবে প্রায় ৮ গন্ডা মুল্যবান ভুমি অভিযুক্ত মাহফুজুর রহমান তার স্ত্রীর নামে খরিদ করেন- ১ কোটি ২৮ লক্ষ ১৫ হাজার টাকায়।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মাহফুজ তদন্ত কর্মকর্তার নিকট বৈধ কোন প্রমানাদি উপস্থাপন করতে পারেন নি বলে তদন্ত কর্মকর্তা আনিছুর রহমান গত ২৩/০১/২০২২ খ্রিঃ এক স্মারক মুলে জেলা রেজিস্ট্রারের নিকট তার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
জেলা রেজিস্ট্রারের পত্রে সুস্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করা হয় যে,অফিস সহকারী মাহফুজুর রহমানের এহেন কার্যকলাপ সরকারী কর্মচারী আচরন বিধি ১৯৭৯ এর ১১ নং বিধির পরিপন্থী, এ ছাড়া সরকারী আচরন বিধি ১৯৬৯ এর বিধি ৩ অনুযায়ী তার স্ত্রী তার পরিবারের সদস্য হওয়ায় স্ত্রীর নামে সম্পত্তি অর্জনের ক্ষেত্রে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট হতে পুর্বানুমতি গ্রহনের বাধ্যবাদকতা রয়েছে যা সে তদন্তকালে দেখাতে পারেনি।
তাই, তার উক্তরূপ কার্যাবলী সরকারী কর্মচারী (শৃঙ্খলা) বিধিমালা ২০১৮ এর
বিধি৩ এর (ঘ) অনুযায়ী অপরাধ করেছেন এমন কী একই বিধিমালার বিধি ৪ এর উপবিধি ৩ এর (ঘ) মোতাবেক চাকুরী হতে অপসারন কিংবা গুরুদন্ড প্রাপ্তির শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
ফলে, অভিযোগের গুরুত্ব বিবেচনায় বর্তমানে সন্দ্বীপ সাব রেজিস্ট্রি অফিসে কর্মরত অফিস সহকারী মাহফুজুর রহমান কে একই বিধিমালার ১২ নং বিধি মোতাবেক চাকুরী হতে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।এখন থেকে সে বিধি মোতাবেক কাজ ছাড়া খরপোষ ভাতা প্রাপ্য হবেন মর্মে সন্দ্বীপ সাব রেজিস্ট্রার আবদুস সোবাহানকে অফিস আদেশ দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে ২০ মে, বৃহষ্পতিবার বিকেলে, সন্দ্বীপ সাব রেজিস্ট্রি অফিসে অভিযুক্ত অফিস সহকারী (সাময়িক বরখাস্ত) মাহফুজুর রহমানের সাথে সাক্ষাত করে তার বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন- “আমার কোনো কথা আমার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে যেনো না যায়, তাই আমি এ ব্যাপারে কোনো বক্তব্য দেবো না, তবে আমি পরিস্থিতির স্বীকার।”
শুক্রবার রাতে মুঠোফোনে কথা হয়, সন্দ্বীপ সাব রেজিস্ট্রার আবদুস সোবহানের সাথে তিনি এ প্রতিবেদক কে বলেন- আমার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মোতাবেক, আমি অভিযুক্ত ও সাময়িক বরখাস্ত অফিস সহকারী মাহফুজুর রহমান কে সরিয়ে দিয়ে তার স্হলে একজন কে কাজ চালনার দায়িত্ব দিয়েছি,পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত শৃঙ্খলা বিধি অনুযায়ী নির্দেশনা পালিত হবে।