মোহাম্মদ এরশাদ আলী, হাটহাজারী প্রতিনিধি:
মুসলমানদের দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ জমায়েত দাওয়াতে তাবলীগের বিশ্ব ইজতেমার অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম -খাগড়াছড়ি মহা-সড়কের কোলঘেষে চট্টগ্রামের হাটহাজারীর চারিয়া এলাকায় বিভাগীয় ইজতেমার জোড় অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ২৪ তারিখ থেকে শুরু হয়ে আগামী ২৮ নভেম্বর আখেরী মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে।মির্জাপুর ইউনিয়নস্থ চারিয়া বিশাল এলাকায় ইজতেমা আয়োজন করছে জেলা তাবলীগ জামাতে।
জানা যায়, উপজেলার চারিয়া বোর্ড স্কুল সংলগ্ন ইজতেমা মাঠে চট্টগ্রাম বিভাগীয় জোড় ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে। এতে চট্টগ্রাম বিভাগের ১১টি জেলা চাঁদপুর, লক্ষিপুর, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, ফেনী, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, রাঙামাটি ও কক্সবাজারসহ বিভিন্ন উপজেলার আলেম-ওলামা ও তাবলিগের তিন চিল্লা সম্পন্নকারীরা অংশগ্রহণ করবেন। এছাড়া তিন দিনের জোড় ইজতেমা ঢাকার টঙ্গী মাঠের বিশ্ব ইজতেমার সার্বিক প্রস্তুতি উপলক্ষে দাওয়াত ও তাবলিগের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য মূলত এই জোড় ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এতে বিশ্ব ইজতেমা সফলতার জন্য গত বারের তুলনাই এবার দ্বিগুন মুসল্লির জমায়েত হবে বলে আশা-প্রকাশ করেছেন তাবলীগ জামাতের মুরুব্বীগন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,দুর-দুরান্ত থেকে ছুটে এসে স্ব-স্ব উদ্যোগে স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে ইজতেমার মাঠের বিভিন্ন অবকাঠামো তৈরী করতে কাজ করতেছে যুবক বৃদ্ধ শিশুরা। প্রতিটি উপজেলা থেকে শত শত লোকজন এসে ইজতেমা মাঠের বিভিন্ন কাজে অংশ নিচ্ছেন। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনই একমাত্র লক্ষ সকলের। বিশাল আকারের জমিতে প্যান্ডেল তৈরী করা হয়েছে।
ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন উপজেলার পাড়া মহল্লার তাবলীগ জামাতের মুসল্লিরা দাওয়াতের কাজ শুরু করেছে। মুসল্লিদের সুবিধার্থে ময়দানে প্যান্ডেল, নিরাপদ স্যানিটেশনের জন্য ল্যাট্রিন, বিশুদ্ধ পানির জন্য গভীর ডিপ টিউবওয়েল, মাঠের মধ্যে পুকুর, পানির হাউজ, নিরাপদ পানির জন্য অস্থায়ী ভ্রাম্যমান ছোট বড় পানির ট্যাংক বসানো, অযু গোসলের জন্য বিশেষ সুবিধায় অানিছ খালের পাড়ে লম্বা ১৫শত ফুটের একটি ঘাটলা সহ অস্থায়ী বিদ্যুত স্থাপন করা হচ্ছে।
ঢাকার মুরুব্বীদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এবারও হাটহাজারীর মির্জাপুর ইউনিয়ন চারিয়া এলাকাতে বিভাগীয় জোড় অনুষ্ঠিত হচ্ছে। হাটহাজারীর চারিয়া মাঠকে ইজতেমার জন্য নির্ধারিত করায় উপজেলা বাসীর ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা বিরাজ করছে। পাশা-পাশি বিভিন্ন দেশের মেহমানগনরাও এই আঞ্চলিক ইজতেমায় অংশ গ্রহন করবেন বলেও জানা যায়। বিদেশী মেহমানদের জন্য আলাদা প্যান্ডেল, ল্যাট্রিন সহ সুবিধার্থে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করছেন। থাকছে কয়েক স্তরের আইন শৃংখলা বাহিনীর বিশেষ টিম। পুরো ইজতেমা ময়দান থাকবে সিসি ক্যামেরা আওতায়। পর্যবেক্ষণ করবেন জেলা আইন শৃংখলা বাহিনী কতৃপক্ষ।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় জোড় ইজতেমার তাবলিগের সমন্বয়কারী হাটহাজারী মাদ্রাসার সহযোগী পরিচালক আল্লামা মুফতি মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, বৃহস্পতিবার থেকে হাটহাজারীতে পাঁচ দিনব্যাপী বিভাগীয় জোড় তাবলীগের ইজতেমা আম-বয়ানের (উন্মুক্ত আলোচনা) মাধ্যমে শুরু হবে। বিশ্ব ইজতেমা সুন্দর ও সফলভাবে সম্পন্ন করতে প্রতি বছর বিশ্ব ইজতেমার কমপক্ষে ৪০ দিন আগে বিভিন্ন জেলায় জোড় আয়োজন করা হয়। আগামীতে বিশ্ব ইজতেমাকে সফল করার উদ্দেশ্যে এবং মানুষকে আল্লাহর পথে নেওয়ার জন্য এবার হাটহাজারীতে এই ৫ দিনের জোড় আয়োজন করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এখানে ১১টি জেলার শুধু তিন চিল্লার প্রায় ২০ হাজার সাথীরাই অংশগ্রহণ করবেন।
ইজতেমা শেষে চিল্লাধারী সাথীরা দেশের বিভিন্ন স্থান ও অঞ্চলে তাবলিগের কাজে ছড়িয়ে পড়বেন। আগামী ২৮ নভেম্বর আখেরী মুনাজাতের মধ্য দিয়ে পাঁচ দিনের বিভাগীয় জোড় ইজতেমা সমাপ্ত হবে।