মোঃ এরশাদ আলী :: বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ হালদা নদীতে মা মাছের নমুনা ডিম দেখা গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে নদীর কিছু কিছু অংশের এই ডিমের নমুনা পাওয়া গেছে বলে জানায় ডিম সংগ্রহকারীরা।
গত সোমবার, মঙ্গলবার রাতে ও বূধবার দিনের বেলায় মেঘের গর্জন ও বৃষ্টি হলে মা মাছ নদীর বিভিন্ন স্পটে ডিমের নমুনা দেয়। তবে বেশি পরিমান ডিম দেয়নি বলে জানিয়েছেন ডিম সংগ্রহকারীরা। এখন মা মাছ ডিম ছাড়ার ভরা মৌসুম। আজ বা কাল বৃষ্টি ও মেঘের গর্জন পাহাড়ি ঢল হালদায় প্রবেশ করলে ও অমাবস্যার জোঁ শেষ হলেই মা মাছ পুরোদমে ডিম দেবে বলে আশা করেন ডিম সংগ্রহকারীরা। হয়তো আজ রাতেও ডিম দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার কিছু কিছু ডিম পাওয়া যায় নয়াহাট এলাকার দুই একটি ডিম ছাড়ার স্পটে। কয়েকজন ডিম সংগ্রহকারী নদীতে জ্বাল নিয়ে নামলেও তেমন বেশি ডিম পায়নি। ডিমের পরিমান একেবারে কম, কয়েকজন ডিম সংগ্রহকারী নদীতে জ্বাল ফেলে মাত্র ২/৩ গ্রামের মতো ডিম সংগ্রহ করেছে। হালদা পাড়ের ডিম সংগ্রহ কারী মোঃ শফি জানান, মা মাছ এখনো ডিম পুরোদমে ছাড়েনি, আরো দুই এক দিন মেঘের গর্জন ও তীব্র বৃষ্টি সহ পাহাড়ি ঢল হালদায় প্রবেশ করলে ডিম দেবে মা মাছ।
এ বিষয়ে হালদা গবেষক ডক্টর শফিকুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি একুশের বাণীকে বলেন৷ বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ নামে পরিচিত হালদা নদীতে চলছে মেজর কার্পজাতীয় মাছের ভরা প্রজনন মৌসুম। এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া প্রজনন মৌসুমের তিনটি জোঁ অতিক্রম হলেও হালদায় দেখা মেলেনি কার্পজাতীয় মাছের কাঙ্ক্ষিত ডিমের। কিন্তু মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া চতুর্থ জোঁ (১৬ থেকে ২১ মে) বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত হালদার কিছু কিছু স্পনিং গ্রাউন্ডে খুবই সামান্য পরিমাণে নমুনা ডিমের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু জোয়ারের সময় হালদায় লবণ পানি প্রবেশ করায় আর দেখা মিলেনি নমুনা ডিমের। পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতসহ পাহাড়ি ঢল নামলে লবণাক্ততা কমে যাবে এবং অনুকুল পরিবেশ সৃষ্টি হয়ে আজ কালকের মধ্যে কার্পজাতীয় মা মাছের ডিম ছাড়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। বৃহস্পতিবার অমাবস্যার জোঁ রয়েছে এই অমাবস্যা শুক্রবার রাতে ছাড়বে, তবে নিয়ম রয়েছে অমাবস্যা ছাড়ার পর মা মাছ নদীতে ডিম দিয়ে থাকে। অমাবস্যা চলাকালে এই ফাঁকে যদি মেঘের গর্জন ও বৃষ্টি পাহাড়ি ঢল নামে তাহলে মা মাছ ডিম ছেড়ে দিতে পারে বলে মনে করেন ডিম সংগ্রহকারী সহ বিশেষজ্ঞরা।
হালদার পাড়ে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে স্থানীয় প্রবীণ ডিম সংগ্রহকারীদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, বর্তমানে চলছে অমাবস্যার জো এই আমাবস্যার জোঁ থাকা অবস্থয় ডিম দিবে না , তবে শেষ হওয়ার পর পর তীব্র মেঘের গর্জন মুষলধারে বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল হালদায় প্রবেশ করলেই ডিম ছাড়বে । আজ রাত্রেও ডিম দিতে পারে বলে জানান তারা ।
এদিকে সেই কাঙ্ক্ষিত ডিম সংগ্রহ করতে ডিম সংগ্রহকারীরা ইতিমধ্যে হালদার পাড়ে রাত যাপন করতে শুরু করেছে। ডিম সংগ্রহ করার বালতি জাল বৈঠা সহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নিয়ে প্রস্তুত রয়েছে।
গত বুধবার রাতে নদীতে মা মাছের ডিম নমুনা দেখা দেয় ঠিক সেই খবর ডিম সংগ্রহকারীদের মাঝে ছড়িয়ে পড়লে চারিদিক থেকে ছুটে আসে ডিম সংগ্রহকারীরা। তারা নদীতে জাল ফেলেও সেই কাঙ্ক্ষিত ডিম পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন। তারপরও সংগ্রহকারীরা প্রস্তুত রয়েছে বৃষ্টি হলে দুই এক দিনের মধ্যে যে কোন মুহূর্তে মা মাছ ডিম দিতে পারে এই আশায় ।